
বাংলাদেশের মোবাইল অপারেটরদের জন্য ডেটা প্যাকেজের ক্ষেত্রে আর কোনো সীমাবদ্ধতা থাকছে না। বিটিআরসি নতুন ‘মোবাইল অপারেটরদের ডেটা এবং ডেটা সংশ্লিষ্ট প্যাকেজ নির্দেশিকা-২০২৪’ অনুমোদন করেছে, যা ২৯ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে গৃহীত হয়। রোববার মোবাইল অপারেটরদের কাছে এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।
পূর্ববর্তী নিয়ম অনুযায়ী, একেকটি মোবাইল অপারেটর সর্বোচ্চ ৪০টি ডেটা প্যাকেজ চালু রাখতে পারতো, যা আগে ৮৫টি পর্যন্ত ছিল। তবে নতুন নির্দেশিকায় এই সীমাবদ্ধতা তুলে নেওয়া হয়েছে, ফলে অপারেটররা তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী যত খুশি ডেটা প্যাকেজ চালু করতে পারবে।
এছাড়াও, নতুন নীতিমালায় সময়সীমা অনুযায়ী ডেটা প্যাকেজ দেওয়ার সুযোগ তৈরি করা হয়েছে। এখন থেকে প্রতি ঘণ্টার প্যাকেজে সর্বোচ্চ ২০০ এমবি, এক দিনের জন্য ৩ জিবি, দুই দিনের জন্য ৫ জিবি এবং তিন দিনের জন্য ৮ জিবি পর্যন্ত ডেটা অফার করতে পারবে মোবাইল অপারেটররা।
পূর্বে, সকল ডেটা প্যাকেজের মেয়াদ ছিল ৭ দিন, ৩০ দিন ও আনলিমিটেড। তারও আগে ৩ দিন, ৭ দিন, ১৫ দিন এবং ৩০ দিনের প্যাকেজ ছিল। নতুন নির্দেশিকায় তিনটি ক্যাটাগরিতে প্যাকেজ বিভক্ত করা হয়েছে— নিয়মিত প্যাকেজ, গ্রাহককেন্দ্রিক বিশেষ প্যাকেজ এবং গবেষণা ও উন্নয়নমূলক (R&D) প্যাকেজ।
গ্রাহক অভিজ্ঞতা আরও স্বচ্ছ করতে, মোবাইল অপারেটরদের প্রতি মাসের রিচার্জ ও ব্যয়ের বিস্তারিত তথ্য বাংলায় এসএমএস আকারে পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে পাঠানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া, প্রতিদিন সর্বোচ্চ তিনটি প্রোমোশনাল এসএমএস পাঠানোর সীমা নির্ধারণ করা হয়েছে এবং একটি সক্রিয় নাম্বারে মাসে সর্বোচ্চ ২০০ এমবি ফ্রি ডেটা দেওয়া যাবে।
একটি গুরুত্বপূর্ণ নতুন নির্দেশনা হলো, রাত ১২টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত কোনো ডেটা প্যাকেজ বিক্রি করা যাবে না। তবে আনলিমিটেড প্যাকেজের অনুমতি থাকলেও, এর জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারণ করতে হবে। এছাড়া, প্যাকেজের মেয়াদ শেষ হওয়ার এক দিন আগে গ্রাহকদের জানানো বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
নতুন নির্দেশিকায় গ্রাহকদের আরও স্বাধীনতা দেওয়ার জন্য মোবাইল অপারেটরদের একটি ‘ফ্লেক্সিবল প্ল্যান’ চালু করতে বলা হয়েছে, যেখানে ব্যবহারকারীরা নিজেদের প্রয়োজন অনুযায়ী টকটাইম, ডেটা ভলিউম এবং এসএমএস নির্ধারণ করতে পারবেন।
বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান নতুন নির্দেশিকাকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই পদক্ষেপ সেবা সহজীকরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। এটি মোবাইল অপারেটরদের জন্য আরও গ্রাহককেন্দ্রিক পণ্য ডিজাইন করার সুযোগ তৈরি করবে।”
এদিকে, রবি’র চিফ কর্পোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অফিসার সাহেদ আলম বলেছেন, “ডিজিটাল সমাজের ভবিষ্যতের জন্য এটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত, তবে প্রতিদিন মাত্র তিনটি প্রোমোশনাল এসএমএস পাঠানোর সীমাবদ্ধতা কিছুটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।”
এই পরিবর্তন মোবাইল ব্যবহারকারীদের জন্য কীভাবে প্রভাব ফেলবে তা সময়ই বলে দেবে, তবে এটি স্পষ্ট যে মোবাইল অপারেটরদের জন্য আরও নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে।
📌 টেকনোলজি ও টেলিকম বিষয়ক আরও আপডেট জানতে চোখ রাখুন TalkBarta-তে! 🚀