
আইসিটি, টেলিকম ও তথ্য-সম্প্রচার উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম জানিয়েছেন, সরকার থেকে পদত্যাগের বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। তিনি বলেন, যদি এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, তবে তা আগে থেকেই জানানো হবে।
সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদান বিতরণ অনুষ্ঠানে বক্তব্য
বৃহস্পতিবার, ঢাকার তথ্য ভবনে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। অনুষ্ঠানে জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ও আহত সাংবাদিকদের জন্য কল্যাণ অনুদান এবং সাংবাদিকদের সন্তানদের বৃত্তি প্রদান করা হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন,
“সরকার থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত হলে আমরা তা আগেই জানিয়ে দেবো। এখনো সে ধরনের কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি এবং আমরা সরকারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।”
তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন,
“নতুন রাজনৈতিক দল বা অন্য কোনো দলে যোগ দেওয়ার প্রয়োজন হলে, আমরা সরকারে থেকে সেটার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হবো না। তবে এখন পর্যন্ত সেই পরিস্থিতি আসেনি।”
আওয়ামী লীগের নিষেধাজ্ঞা নিয়ে মন্তব্য
এক প্রশ্নের জবাবে নাহিদ ইসলাম বলেন, আওয়ামী লীগ কেন নিষিদ্ধ হচ্ছে না, এটি শুধু আনুষ্ঠানিক নয়, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তও বটে।
তিনি আরও বলেন,
“আমার ব্যক্তিগত মতামত হলো, গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগ যে ফ্যাসিবাদী শাসন চালিয়েছে এবং জুলাই বিপ্লবে যে গণহত্যা ঘটিয়েছে, তাতে তাদের রাজনীতি চালিয়ে যাওয়ার সুযোগ থাকা উচিত নয়।”
সাংবাদিকদের ভূমিকা ও গণমাধ্যমের স্বাধীনতা
জুলাই গণঅভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন,
“এই বিপ্লবে অনেক সাংবাদিক সাহসিকতার সঙ্গে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছেন। তবে কিছু সাংবাদিক ফ্যাসিবাদী শক্তির সহযোগী হিসেবেও কাজ করেছেন, যা অত্যন্ত দুঃখজনক।”
তিনি আরও বলেন,
“গত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার। তবে গণমাধ্যমের স্বাধীনতার নামে ফ্যাসিবাদী শক্তিকে পুনর্বাসন করা হবে না।”
শহিদ সাংবাদিকদের পরিবারের পাশে থাকার প্রতিশ্রুতি
নাহিদ ইসলাম প্রতিশ্রুতি দেন যে,
“বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার শহিদ ও আহত সাংবাদিকদের সম্মান এবং স্বীকৃতি প্রদান করবে। প্রবীণ ও গুণী সাংবাদিকদের জন্য অবসরকালীন মাসিক ভাতা প্রদানও সরকারের বিবেচনায় রয়েছে।”
সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদান প্রদান
অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের অনুদান প্রদান সংক্রান্ত তথ্য উপস্থাপন করা হয়।
✅ মোট ৪৬৩ জন সাংবাদিক পরিবারের মাঝে ১ কোটি ৮০ লাখ ২৬ হাজার টাকা বিতরণ করা হয়।
✅ ১২৭ জন সাংবাদিক ও মৃত সাংবাদিক পরিবারের জন্য বরাদ্দ করা হয় ৮৯ লাখ টাকা।
✅ ৩০৫ জন সাংবাদিকের সন্তানের জন্য এককালীন বৃত্তি হিসেবে প্রদান করা হয় ৫৫ লাখ ২৬ হাজার টাকা।
✅ জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহিদ ৫ জন সাংবাদিক পরিবারের জন্য ২ লাখ টাকা করে মোট ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়।
✅ গণঅভ্যুত্থানে আহত ২৬ জন সাংবাদিকের জন্য ১ লাখ টাকা করে মোট ২৬ লাখ টাকা প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী বিশিষ্ট ব্যক্তিরা
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন:
📌 তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবা ফারজানা
📌 ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলাম
📌 সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলম
📌 বিএফইউজের সহ-সভাপতি খায়রুল বাশার
📌 প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব ভূঁইয়া
📌 চলচ্চিত্র ও টেলিভিশন ইনস্টিটিউটের প্রধান নির্বাহী আবুল কালাম মোহাম্মদ শামসুদ্দিন
অনুষ্ঠানে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন সংস্থার প্রধান এবং প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।
📌 গণমাধ্যমের ভবিষ্যৎ ও সাংবাদিকদের সুরক্ষা নিয়ে আপনার মতামত কী? কমেন্টে জানান!
📢 সর্বশেষ প্রযুক্তি ও জাতীয় সংবাদ পেতে TalkBarta-এর সাথেই থাকুন! 🚀