রাজশাহীর তানোরের পারুল বেগমের ২ লাখ টাকা সহ ডাক বিভাগের কর্মীরা গ্রাহকের অর্থ এবং ডাকের নিজস্ব তহবিল মিলিয়ে মোট ৫৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এ ধরনের ১১টি অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেছে। এসব কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় দুদককে চিঠি দিয়েছে।
তবে, শুধুমাত্র চিঠি দেয়া যথেষ্ট নয়, দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করার দাবি জানিয়েছে গ্রাহক অধিকার নিয়ে সক্রিয় সংগঠন বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন।
বৃহস্পতিবার সংগঠনটির সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানানো হয়। তিনি বলেন, "গতকাল ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্য প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন যে, ডাক বিভাগের অসাধু কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী গ্রাহকের ৫১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে এবং তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দুদককে চিঠি দিয়ে জানানো হয়েছে। এজন্য আমরা প্রতিমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই। যেহেতু অর্থ আত্মসাৎকারীরা চিহ্নিত হয়েছেন, তাই তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে ফৌজদারি অপরাধে শাস্তি প্রদান করা যেতে পারে। পাশাপাশি, ডাক বিভাগের মহাপরিচালক তার দায়িত্ব অবহেলার কারণে দায়মুক্তি পেতে পারেন না।"
তিনি আরও বলেন, "দুদকের মাধ্যমে শাস্তি নিশ্চিত করা সময়সাপেক্ষ ব্যাপার। ডাক মন্ত্রণালয় ও বিভাগ নিজেরাই ফৌজদারি অপরাধে দোষী সাব্যস্ত করে ফৌজদারি আদালতে এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে অর্থ আদালতে মামলা করতে পারেন। এছাড়াও, ডাক বিভাগের দুর্নীতি ও অনিয়ম তদন্তে একটি নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করা জরুরি বলে আমরা মনে করি।"
ডাক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি রাজশাহীর তানোর উপজেলা পোস্ট অফিসে পরিবার সঞ্চয়পত্রে পারুল বেগম নামের এক নারীর জমা রাখা দুই লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ ওঠে। টাকা ফেরত না পাওয়ায় আত্মহত্যার চেষ্টা করেন পারুল বেগম। তদন্তে দেখা গেছে, তানোরের পোস্টমাস্টার মোকসেদ আলম পারুল বেগম সহ ৫১ জনের কাছ থেকে ১ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন। এছাড়া, চট্টগ্রাম জিপিওতে ২৯ কোটি টাকা, নোয়াখালী পোস্ট অফিসে সাড়ে ৯ কোটি টাকা, বরিশাল মেডিক্যাল কলেজ পোস্ট অফিসে ২ কোটি, পটুয়াখালী পোস্ট অফিসে ২ কোটি, যশোর পোস্ট অফিসে ১ কোটি ৮৪ লাখ, শ্যামপুর পোস্ট অফিসে ৭৩ লাখ, দিনাজপুর পোস্ট অফিসে সঞ্চয়পত্রের ১২ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনা রয়েছে।